গাংনীর সেই আলোচিত সালিশের ৩ মোড়ল গ্রেফতার।

সুজন মাহমুদ
সুজন মাহমুদ
3 Min Read

মিথ্যা অভিযোগে মঙ্গলবার সকালে মেহেরপুরের গাংনীর বানিয়াপুকুর গ্রামে জুবায়ের হোসেন (৪০) নামের একজনকে বেদম মারপিট করে সালিশ বিচারে এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। সেই সাথে ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছিলো। তার বিরুদ্ধে চুরির মিথ্যা অভিযোগ এনে নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনায় ওই গ্রামের প্রধান মোড়লসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। জুবায়ের পাশর্^বর্তী ষোলটাকা গ্রামের আয়ুব হোসেনের ছেলে।
জুবায়ের হোসেন জানান, তিনি সোমবার রাতে বানিয়াপুকুর গ্রামের পাশে নিজ পুকুর পাড়ে মাছ পাহারা দিচ্ছিলেন। এসময় গ্রামের মাহাতাব আলীর ছেলে আলাল, আচেল উদ্দীনের ছেলে রবিউল ও মোজাফের ছেলে আজাম্মেল ওই জুবায়ের হোসেনকে বেধড়ক মারপিট করে। এতে জুবায়ের হোসেনের দুই পা হাত রক্তাক্ত জখম হয়। এছাড়াও পুরো পিঠে রক্ত জমে জখম হয়। পরে তারা জুবায়েরকে প্রাইমারী স্কুলের একটি কক্ষে আটক রাখে।
মঙ্গলবার সকালে সালিশ বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়। খবর দেওয়া হয় স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পে। সালিশে জুবায়েরকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়েই পুলিশের উপস্থিতিতে জোরপূর্বক ৩০০ টাকা মুল্যের নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে মুচলেকা নেয় তারা। সেই সাথে এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। মারাত্মক আহত জুবায়েরকে তার পরিবারের লোকজন গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
বানিয়াপুকুর গ্রামের প্রধান মোড়ল শরিয়ত জানান, গ্রামের লোকজন জুবায়েরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরে বিচার সালিশ বসিয়েছে তাই সামাজিক ভাবে তার বিচার করা হয়েছে। গ্রাম্য বিচারে আদায়কৃত টাকা কী কাজে ব্যবহার করা করবেন জানতে চাইলে তিনি সামাজিক উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করা হবে বলেও জানান তিনি। সালিশীতে এক লাখ টাকা জরিমানা করতে পারে কি না? প্রশ্নের জবাব মেলেনি।
ষোলটাকা গ্রামের সাবেক মেম্বর ময়নাল হক জানান, তিনিসহ ষোলটাকা গ্রামের লোকজন জুবায়েরকে নিতে এসেছিলাম কিন্তু বানিয়াপুকুর গ্রামের সমাজপতিরা জুবায়েরকে না দিয়ে জরিমানা করেছে এবং মুচলেকা লিখে নেয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকার পরও কিভাবে সালিশের নামে প্রহসন করে তা বোধগম্য নয়। সমাজপতিরা যে মোটা টাকা জরিমানা করেছে তা সম্পুর্ণ অবৈধ।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জুবায়ের বাদী হয়ে ৮ জনকে নামে এবং অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামী করে গাংনী থানায় মামলা করে। পুলিশ প্রধান মোড়ল শরিয়তসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। অন্যান্য দুজন আসামী হচ্ছেন- শহিদুল ইসলাম ও রাশেদুল ইসলাম বিদ্যুত।
গাংনী থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, জুবায়ের হোসেনের দায়ের করা মামলাটি আমলে নিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছেন। আসামীদেরকে বুধবার দুপুরে মেহেরপুর আদালতে প্রেরণ করা হয়। অন্যান্য আসামীদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান গাংনী থানার ওসি

Share This Article