মেহেরপুরে বেগুন গাছে থোকা থোকা টমেটো

ভয়েস অব মেহেরপুর প্রতিবেদক
ভয়েস অব মেহেরপুর প্রতিবেদক
3 Min Read
সবজি চাষী ফারুক হোসেন

গ্রাফটিং পদ্ধতিতে বেগুন গাছে টমেটো আবাদে লাভবান হওয়াতে বদলে যাচ্ছে মেহেরপুরের সবজি চাষ। রাস্ট্রিয় সহায়তা পেলে গ্রাফটিং পদ্ধতিতে বেগুন গাছে টমেটোচাষ বাড়বে। স্বাবলম্বী হবে প্রান্তিকপর্যায়ের কৃষক।
আমার বেগুনগাছে টমেটো দেখতে প্রতিদিনই আসছে মানুষ। বিরক্ত হলেও ভালো লাগছে আমার জমিতে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ বেগুন গাছে টমেটো দেখতে আসছে। বলছিলেন মেহেরপুর সদর উপজেলার হিজুলি গ্রামের সবজি চাষী ফারুক হোসেন। সরেজমিনে দেখা যায় সবুজ গাছের নিচের ডালে ডালে ঝুলছে বেগুন, ওপরের ডগায় ডগায় থোকা থোকা কাঁচা-পাকা টমেটো। বেগুন গাছের গোড়া মাটিতে থাকলেও টমেটো গাছের গোড়া মাটিতে নেই। এ দৃশ্য মেহেরপুরের হিজুলি গ্রামের সবজি চাষি ফারুক হোসেনের বেগুন খেতে। কৃষি বিভাগ বেগুনগাছে কলমের মাধ্যমে টমেটো গাছ লাগিয়ে দেওয়ার পর এই সফলতা পান । কৃষি কর্মকর্তা নাসরিন পারভিন জানান-এক মাস বয়সী বেগুনের চারা পলি ব্যাগে নিতে হবে। সেখানে এক মাস রাখার পর উন্নত জাতের এক মাস বয়সী টমেটোর সঙ্গে গ্রাফটিং কলম করতে হবে। তারপর কলম করা চারা ২০ থেকে ২৫দিন পর রোপন করতে হবে। সাধারণ টমেটো গাছ থেকে তিন থেকে চার কেজি টমেটো হলেও গ্রাফটিং করা টমেটো গাছ থেকে তিনগুন বেশী ফলন পাওয়া যায়। গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষে আশার আলো দেখছেন এ জেলার কৃষকরা।
কৃষি বিভাগ মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি ইউনিয়নের হিজুলী গ্রামের ফারুক হোসেন ৫ কাঠা জমিতে বারি হাইব্রিড ৮ জাতের টমেটো চাষ করেছেন গ্রাফটিং পদ্ধতিতে। কাঁচা-পাকা টমেটোয় ভরে গেছে গাছ । ইতিমধ্যে প্রায় ৩০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রিও করেছেন তিনি। আরও ৪০ হাজার টাকার বিক্রির আশা করছেন।
গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করা ফারুক হোসেন বলেন- উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগীতায় প্রথম অবস্থায় পরিক্ষামূলকভাবে ৫ কাঠা জমিতে গ্রাফটিং করেছি। ফলন ও পর্যাপ্ত দাম পাচ্ছি। আগামীতে আরও ১ বিঘা লাগানোর পরিকল্পনা করছি।

মেহেরপুর জেলার চাহিদা মেটাতে ১০ হেক্টর জমিতে গ্রাফটিং পদ্ধতিতে বেগুন গাছে টমেটো চাষ সম্প্রারণ প্রয়োজন। আগামী বছরের মধ্যে গ্রাফটিং পদ্ধতিতে জেলার চাহিদা মেটানো সহজতর হবে বলে আশা করছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা।

গ্রাফটিং টমেটো
নিজের চাষ করা সবজি ক্ষেতে চাষী ফারুক হোসেন

গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষ দেখতে আসছেন স্থানীয় কৃষকরা। অসময়ে টমেটো। বাজারে চাহিদাও বেশ। অনেক কৃষক ইতোমধ্যে গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করতে আগ্রহী হয়েছেন। স্থানীয় কৃষক রবিউল ইসলাম বৃহস্পতিবার দেখতে এসেছিলেন টমেটোর গ্রাফটিং। তিনি বলেন- গ্রাফটিং পদ্ধতিতে এতো বেশি ফলন দেয় আমার ধারনাতে ছিলনা। সেই সাথে একই গাছে বেগুনও ধরছে। আমি নিজেও এই পদ্ধতিতে চাষ করবো বলে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাসরিন পারভিন বলেন- আমাদের পক্ষ থেকে কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। কৃষি বিভাগের পরামর্শ গ্রহণ করে গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো জাত বারি-৮ চাষ করে সফলতার মুখ দেখেছেন কয়েকজন কৃষক। সদর উপজেলায় ১৫ কাঠা জমিতে ৩ জন চাষী গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটোর চাষ করছেন। কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। মেহেরপুরে এ জাতের টমেটোর চাষ ছিল না। বর্তমানে কৃষকরা গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন।

Share This Article