১.
কোনটা বেশি প্রিয়
প্রেমিক নাকি যোদ্ধা তুমি কোনটা বেশি প্রিয়,
প্রেমিকের চেয়ে যোদ্ধা বলা হয়তো বেশিই শ্রেয়।
বিজ্ঞান ভাষাটা বড্ড কঠিন যাই না মাথায় ধরা,
আবার সহজ ভাবে বলতে গেলে যায়না নাগাল পাওয়া।
তুমি যোদ্ধা হয়ে রুখে দাড়াও!
আবার প্রেমিক হয়ে স্পর্শে
যেভাবেই হোক বাচিয়ে রাখো শীতল কিংবা ঝলসে।
আঁচড় দিয়ে কাটো যেমন রক্তবর্ন চোখে,
তেমন তোমার ছোঁয়ায় মুক্তি মেলে, প্রশান্তি ফোঁটে মুখে।
কোনটা তুমি ভেবে বলো, রক্তকবরী নাকি শীতলক্ষ্যা
তবুও প্রশ্ন থেকেই যাই তুমি প্রেমিক নাকি যোদ্ধা !
২.
ফিরবো না আর ঘরে
একদিন কাক ডাকা ভোরে আচমকা যখন ঘুম ভাঙ্গবে
তখন ভেবে নিও আমি আর নেই,
সমস্ত মায়া কাটিয়ে তখন আমি অনেক দূরে।
ফেলে রেখে সমস্ত অনুভূতি, প্রেম ভালোবাসা
হঠাৎ ই করে ফেলা সেই অসহ্য পাগলামি
সময় অসময়ে তোমায় বিরক্ত করা সকল কিছুর উর্ধে তখন আমি।
সেদিন আর ভোরের সূর্য দেখে বলবোনা জেগে ওঠো,
করবোনা আর কোন বাহানা,
থাকবে না ছোট ছোট চাহিদা গুলো
আমি তখন ভেসে যাবো ইচ্ছে মতো
থাকবে না কোন নিষেধের বায়না।
আমি মুক্ত আকাশে স্বাধীন পাখির মতো উড়ে যাবো,
সমস্ত মায়া পিছুটান কে এক নিমেষে ভুলে,
একবারো ফিরে চাইবোনা, হারিয়ে যাবো স্বার্থপরের মতো অনেক দূরে।
সেদিন হঠাৎ আমার এ না থাকার খবর তোমায় হয়তো হতাশ করবে
তবে এটা আমার কাছে খুবই তুচ্ছ,
কেননা এটা যে আমার বহুদিনের প্রতীক্ষা,
চিরবিদায়ে একবার না হয় চেয়ে দেখো তখন,
নীরবে সেই অবুঝ মুখের চাওনিতে খুঁজে নিও ভালোবাসা
আমি নিথর হয়ে থাকলেও ঠিক বুঝে নিবো তোমার দুটি চোখের ভাষা।
এভাবেই একদিন বিলীন হয়ে যাবো হাজারো অবহেলার ভীড়ে,
সেদিন সত্যি হারিয়ে যাবো আর ফিরবোনা ‘কো ঘরে।
৩.
বেলাশেষে
বেলাশেষে এসে আজ একটা বিষয় খুব খেয়াল করলাম,
আগের চেয়েও আমার দরটা বেড়েছে অনেক গুণ।
মনে হচ্ছে প্রতিটা মূহুর্তে কেউ যেন খুব শক্ত করে আকড়ে ধরছে,
আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলছে প্রতিনিয়তো।
কিন্তু কিছু দিন আগেও এতোটা গুরুত্ব কখনো বুঝিনি,
কেউ বুঝতেও দেয়নি।
ক্ষনে ক্ষনে বুঝিয়ে দিয়েছে আমি কতটা অপদার্থ, কতটা বিবেকহীন,
চোখের জলে রাত পার করেছি
অসহ্য যন্ত্রণা বুকে চেপে রেখেছি,
কেউ তা বোঝেনি কোনদিন।
হার মেনে নিয়েছিলাম নিজের কাছে
একটু একটু করে শক্ত করেছি নিজেকে,
হয়তো এটাই জীবন, হাজারো অবহেলা হয়তো ভাগ্যের লিখন।
কিন্তু আজ বড় অবাক আমি,
এতোদিন পর এই বুঝি জীবনের মোড় ঘুরলো,
তবে হাস্যকর তা আমার কাছে কেননা অনেক টা সময় আমার যে হারালো।
আজ জীবনের পরিশেষে যখন নিজের ভিতর স্থির হয়ে, বাধক্যে নুয়ে পড়া একটা মানুষ আকড়ে ধরতে চাই
বিপরীত মানুষটাকে,
যাকে সে কোনদিনও বোঝেনি,
সারা জীবন রেখেছে বিশাল দূরত্ব,
আজ বেলাশেষে সেখানেই ফিরছে
তাকে দিচ্ছে জীবনের সবটুকু গুরুত্ব।
সময় বদলায় একদিন, আর এটাই ভাগ্য,
তবে সময় থাকতে কেউ বোঝেনা
কে কার কতটুকু যোগ্য।
শৈশবেই সাহিত্যের প্রেমে পড়েছিলেন তানিয়া জামান। সেই প্রেমে থেকে কবি হয়ে ওঠার পথচলা শুরু হয় বাংলাদেশ বার্তা সংবাদ পত্রে যখন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় তাঁর প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। বর্তমানে বেশ কিছু ম্যাগাজিন সহ অনলাইনে তার লেখা নিয়মিত প্রকাশ হয়। কাব্যপ্রতিভার স্বীকৃতিস্বরুপ বেশ কিছু সম্মাননা স্মারক পেয়েছেন তিনি।
তানিয়া জামান বেড়ে উঠেছেন মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার ছোট্ট গ্রাম চৌগাছাতে। ১৯৯৪ সালের ২০শে মার্চ বাবা ব্যাংকার মোঃ ওবায়দুজ্জামান ও মা আনোয়ারা খাতুনের কোলে ঠাই নেন।
অবসরে তিনি লেখালেখি, বই পড়া, বেড়াতে যেতে ভীষণ ভালোবাসেন।
“স্মৃতির ক্যানভাস” তার প্রথম সম্পাদিত কাব্যগ্রন্থ।