ধরুন কোন এলাকায় ফুলকপি চাষের খুব প্রচলন, তাই ফুলকপি বীজের চাহিদা অনেক বেশি। কিন্তু ওই এলাকায় ফুলকপির বীজ শুধুমাত্র সরকারিভাবে নির্দিষ্ট অল্প মূল্যেই সাপ্লাই করা হয়, এবং যা সাপ্লাই করা হয় তার যোগান চাহিদার তুলনায় খুবই কম।
এখন এই অবস্থায় চাহিদা আর যোগানের মিল নেই, আবার সাধারণ বাজারে সরকারিভাবে মূল্যও স্থির করে রাখা আছে, অর্থাৎ প্রাইস ইনফ্লেক্সিবিলিটির কারণে মূল্য বেড়ে যোগান কমায়া চাহিদার সাথে ব্যালেন্স করতে পারছে না। এই অবস্থায় যা হবে সাধারণ বাজারের প্যারালেলি একটা কালোবাজার গড়ে উঠবে, যেখানে দাম ফ্লেক্সিবল, যোগানের সাথে মিলায়া দাম বাড়বে কমবে, এবং বাড়তি দামের কারণে চাহিদা কমে আসবে, লোকেরা বাড়তি দামের কারণে অন্য বীজ কিনবে এই টাইপের। এবং যেহেতু এই বাজারটা ডাইনামিক, প্রফিটের পরিমাণ অনেক বেশি তাই ফিক্সড প্রাইজের সাধারণ বাজার থেকে পণ্য সাইফনড হয়ে কালোবাজারে চলে আসবে। সাধারণ বাজারে এসে মানুষ কিছু পাবে না।
এখন এই কালোবাজার ব্রেক করার কিছু উপায় আছে-
১/ এটা বেস্ট উপায়, পণ্যের যোগান বাড়িয়ে দেওয়া। সরকারিভাবে একটা বীজ উৎপাদন কেন্দ্র দিয়ে ফুলকপির বীজের উৎপাদন ৩ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া যাতে স্থানীয় চাহিদা সম্পূর্ণভাবে আপনি পূরণ করতে পারেন।
২/ সেকেন্ড বেস্ট উপায় হচ্ছে কালোবাজার যারা করে তাদের বিরুদ্ধে আপনি কঠিন জেল জরিমানার আইন করে দিলেন, তাদের গ্রুপকে, সিন্ডিকেটকে জেলে দিলেন, অর্থাৎ ব্ল্যাক মার্কেটিং এর অপারেশন কস্ট অনেকগুণে বাড়িয়ে দিলেন।
৩/ দ্রব্যমূল্যের উপর নিয়ন্ত্রণ উঠায় নেওয়া, মানে সরকারি থেকে প্রাইভেট সেক্টরে দিয়ে দেওয়া, প্রাইভেট সেক্টর নিজের লাভ আর পণ্যের চাহিদা হিসাব করে উৎপাদন করে যোগান নিয়ন্ত্রণ করবে।
৪/ জনগণের মধ্যে বিকল্প চাহিদা তৈরি করতে পারেন, ফুলকপির বীজ দিয়ে যেহেতু কুলাতে পারছেন না তাই মানুষের মধ্যে বাঁধাকপি চাষের জনপ্রিয়তা তৈরি করতে পারেন, বাঁধাকপি বীজের সরবরাহ বাড়াতে পারেন।
এখন কালোবাজার বন্ধের জন্য এতো যে কাজ আছে এইগুলা কিছুই না করে আপনি করলেন কি বিভিন্ন প্রকারের কনজিউমার ব্যারিয়ার দেওয়া শুরু করলেন। ফুলকপি বীজ কিনতে এখন থেকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বহস্তে দস্তখত করা কাগজ লাগবে নাহলে বীজ বিক্রি হবে না, চায়ের কাপের এক কাপে বীজ কালেক্ট করা লাগবে- এই ধরণের। মানে পুরা প্রসেস চালিয়ে দিলেন কালোবাজারের প্রাইমারি ভিক্টিম, যারা কোন উপায় না পাইয়া বেশি দামে কালোবাজার থেকে জিনিস কালেক্ট করতে বাধ্য হয় তাদের উপরই, যারা সঠিক দামে হেনস্থা ছাড়া প্রডাক্ট পেলে সাধারণ বাজার থেকেই পণ্যটা নিতো, তাদেরকেই হ্যারাস করার সিদ্ধান্ত নিলেন।
এবং এই বিশাল রিকোয়ারমেন্টের কারণে ফুলকপি বীজের চাহিদা কিছু হয়তো কমলোও, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাইন নিয়ে অল্প কিছু লোক হয়তো কালেক্টও করলো।
আর এইটারেই আপনি কালোবাজারের বিরুদ্ধে সফল সংগ্রাম ঘোষণা করে দিলেন।
এইভাবেই ট্রেনের টিকিটের কালোবাজার সিন্ডিকেট ভাঙ্গা হচ্ছে।